ঈশ্বরগঞ্জ (ময়মনসিংহ) প্রতিনিধি
ঈশ্বরগঞ্জ পৌর এলাকার আইডিয়াল কলেজের মানবিক বিভাগ থেকে এবার এইচএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিলেন শাহরিয়ার। আজ মঙ্গলবার পরীক্ষার ফলাফল প্রকাশিত হয়। খবর পেয়ে আজকের পত্রিকার এ প্রতিবেদক শাহরিয়ারে গ্রামের বাড়ি যান। জানতে পারেন, শাহরিয়ারের বাবা-মা দুজনই ওমরা পালন করতে গেছেন। তবে বাড়িতে থাকা মামাতো ভাই সোহানুর রহমান রিয়াদ বলেন, শাহরিয়ার জিপিএ ৪.৮৩ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছেন। ছেলের ফলাফলের খবরটি মোবাইল ফোনে তাঁর বাবা-মাকে জানানো হলে তাঁরা কান্নায় ভেঙে পড়েন।
এদিকে বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, শাহরিয়ারের পরীক্ষার ফলাফলের খবর পেয়ে পাড়া-প্রতিবেশীরাও এসে জড়ো হচ্ছেন বাড়িতে। নাতির কথা স্মরণ করে বারান্দায় বসে বিলাপ করছেন শাহরিয়ারে অশীতিপর দাদি। প্রতিবেশীরা অনেকেই সান্ত্বনা দিচ্ছেন ওই বৃদ্ধাকে। এ ছাড়াও দেখা যায়, শাহরিয়ার যে কক্ষে ঘুমাতেন, চেয়ার-টেবিলে বসে পড়াশোনা করতেন সবকিছু অগোছালো অবস্থায় পড়ে আছে। টেবিলের এক কোনায় কলেজের ব্যাগগুলোতে ধুলো জমে আছে। মাথায় যে টুপিটা পরতেন, সেটিও টেবিলের ওপর পড়ে আছে।
নিহতের স্বজনদের সূত্রে জানা গেছে, আবদুল মতিনের এক ছেলে ও এক মেয়ের মধ্যে শাহরিয়ার বড়। কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে চলমান এইচএসসি পরীক্ষা স্থগিত হয়। ওই অবস্থায় পাঁচটি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে ১০ জুলাই ঢাকায় খালার বাসায় বেড়াতে যান শাহরিয়ার। সেখানে খালাতো ভাই বাদলের সঙ্গে আন্দোলনে অংশ নেন তিনি। ১৯ জুলাই বিকেলে মিরপুর ১০ নম্বর গোলচত্বরের কাছে গুলিবিদ্ধ হন শাহরিয়ার। ডান চোখের পাশ দিয়ে গুলি ঢুকে মস্তিষ্ক ভেদ করে তাঁর। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২০ জুলাই মারা যান। ছেলে হত্যার বিচারের জন্য আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে মামলা করেন মোহাম্মদ আবদুল মতিন।
এ বিষয়ে ঈশ্বরগঞ্জ আইডিয়াল কলেজের অধ্যক্ষ আলমগীর কবীর আজকের পত্রিকাকে বলেন, ‘শাহরিয়ার পড়াশোনায় যেমন মেধাবী ছিল, তেমনি আচার-আচরণেও অসম্ভব বিনয়ী ও ভদ্র ছিল। একটা রত্নকে হারিয়েছি আমরা। আল্লাহ তাঁকে সর্বোত্তম বেহেশত নসিব করুন।’
0 Comments