বাংলার পাতা ডেস্ক
প্রকাশ: ৪ নভেম্বর ২০২৪:

আর্থিক সচ্ছলতা আনতে ধারদেনা করে এক যুগ আগে লেবাননে পাড়ি জমিয়েছিলেন ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নিজাম উদ্দিন। তবে সেখানে গিয়ে নির্ধারিত কাজ না পাওয়ায় ভালো উপার্জন ছিল না। বৈধ কাগজপত্র না থাকায় দেশেও ফেরা হয়নি। দীর্ঘ এ প্রবাসজীবনে পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতাও আনতে পারেননি। কেবল মায়ের থাকার জন্য একটি টিনের ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন।

লেবাননের রাজধানী বৈরুতে হাজমিয়ে এলাকায় ইসরায়েলি বিমান হামলায় নিজাম উদ্দিন গত শনিবার স্থানীয় সময় বেলা সাড়ে ৩টার দিকে প্রাণ হারান। তিনি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবা উপজেলার খাড়েরা গ্রামের মৃত আব্দুল কুদ্দুসের ছেলে। মায়ের নাম মৃত আনোয়ারা বেগম। তিন বোন ও দুই ভাইয়ের মধ্যে নিজাম ছিলেন সবার ছোট।

নিজামের বড় বোন সায়েরা বেগম বাংলার পাতাকে জানান, বৈধ কাগজপত্র না থাকায় নিজাম দেশে ফিরতে পারেননি। পরিবারের সবাই বিয়ের কথা বললেও অর্থনৈতিক কারণে বারবারই এড়িয়ে গেছেন। পরে অবশ্য ওখানেই বিয়ে করেন। প্রবাসজীবনে তিনি তেমন কিছু করতেও পারেননি। মায়ের জন্য টিনের একটা ঘর বানিয়ে দিয়েছিলেন কেবল। সেই ঘর বানানোর ছয় মাস পর তার মা আনোয়ারা বেগমও মারা যান। এর মধ্যে গত শনিবার লেবাননের বৈরুতে একটি হোটেলে বিমান হামলায় মৃত্যু হয়েছে নিজামের। ওইদিন রাতেই তার বন্ধুর মাধ্যমে সে খবর আসে পরিবারের কাছে। ছোট ভাইয়ের মরদেহ দ্রুতই দেশে ফিরিয়ে আনার দাবি জানান সায়েরা বেগম।

বৈরুতের বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্র জানায়, নিজামের স্ত্রী লেবাননেই আছেন। তার সঙ্গে দূতাবাস যোগাযোগ রাখছে। যুদ্ধের পরিস্থিতিতে ফ্লাইট না থাকার কারণে নিজামের মরদেহ বাংলাদেশে পাঠানো সম্ভব হচ্ছে না।

এদিকে নিজামের মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন লেবাননে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত এয়ার ভাইস মার্শাল জাভেদ তানভীর খান। পাশাপাশি শোকাহত পরিবারের সদস্যদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।